মুমিন নারীদের বিশেষ বিধান
লেখক: ড. সালেহ বিন ফাওজান বিন আব্দুল্লাহ আল-ফাওজান

বিষয়: ইসলামে নারী
অনুবাদক: সানাউল্লাহ নজীর আহমদ
সম্পাদক: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
পৃষ্ঠা: ১৬৮
কভার: পেপারব্যাক

একজন মুমিন নারীর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো ঈমান ও তাকওয়া অবলম্বন করা। তাকওয়া হলো আল্লাহভীতি এবং তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা। আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয়ই মুসলিম পুরুষ ও মুসলিম নারী, মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী, আনুগত্যশীল পুরুষ ও আনুগত্যশীল নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও ধৈর্যশীল নারী...” (সূরা আহ্‌যাব ৩৩:৩৫)। তাই একজন মুমিন নারীর উচিত তার ঈমানকে দৃঢ় করা এবং সর্বদা আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা।

লজ্জাশীলতা ও শালীনতা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গুণ। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “প্রত্যেক ধর্মেরই একটি বিশেষ চরিত্র রয়েছে, আর ইসলামের চরিত্র হলো লজ্জাশীলতা (হায়া)।” (ইবনু মাজাহ, ৪১৮১)। একজন মুমিন নারী তার কথাবার্তা, পোশাক এবং আচরণে লজ্জাশীলতা বজায় রাখে, যা তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে। এই লজ্জাশীলতার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো পর্দা। আল্লাহ বলেন, “হে নবী! আপনার স্ত্রীগণ, কন্যাগণ ও মুমিন নারীদের বলুন, তারা যেন নিজেদের উপর চাদরের কিছু অংশ টেনে নেয়। এতে তাদের চিনে ফেলা সহজ হবে এবং তারা নির্যাতিত হবে না।” (সূরা আহ্‌যাব ৩৩:৫৯)। পর্দা নারীর সম্মান রক্ষা করে এবং তাকে সমাজের বিভিন্ন ফিতনা থেকে বাঁচায়।

পরিবারের প্রতি দায়িত্বশীলতা একজন মুমিন নারীর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “যে নারী পাঁচ ওয়াক্ত সালাত পড়ে, রমজানের রোজা রাখে, তার লজ্জাস্থানের হেফাজত করে এবং তার স্বামীর আনুগত্য করে, তাকে বলা হবে: জান্নাতের যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা, প্রবেশ করো।” (মুসনাদ আহমদ, ১৬৬১)। স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, সন্তানদের ইসলামী শিক্ষায় বড় করা এবং পরিবারের শান্তি বজায় রাখা একজন নারীর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

একজন মুমিন নারী দীনদার জীবনযাপনে অগ্রাধিকার দেয়। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “নারীদেরকে চারটি গুণের কারণে বিয়ে করা হয়: তার সম্পদ, বংশমর্যাদা, সৌন্দর্য এবং ধর্মপরায়ণতা। তবে তুমি ধর্মপরায়ণ নারীকে গ্রহণ করো, তাহলে সফল হবে।” (বুখারি, ৫০৯০)। তাই দুনিয়ার মোহ পরিহার করে আখিরাতকে প্রাধান্য দেওয়া একজন মুমিন নারীর কর্তব্য।

জীবনের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও পরীক্ষার সময় একজন মুমিন নারী ধৈর্য ধারণ করে এবং আল্লাহর ওপর নির্ভর করে। আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।” (সূরা বাকারা ২:১৫৩)। বিপদে ধৈর্য ধারণ করা, কষ্টে আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশা করা এবং কখনো হতাশ না হওয়া একজন মুমিন নারীর বৈশিষ্ট্য।

কন্যাসন্তানের প্রতি ইসলামের বিশেষ দৃষ্টি রয়েছে। জাহেলি যুগে কন্যাশিশুকে অবহেলা করা হতো, কিন্তু ইসলাম নারীদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেছে। আল্লাহ বলেন, "যখন জীবন্ত কবর দেওয়া কন্যাশিশুকে জিজ্ঞাসা করা হবে—কোন অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছিল?" (সূরা আত-তাকওীর: ৮-৯)।