সবর ও শোকর

লেখক: আল্লামা ইবনুল কায়্যিম জাওযিয়্যাহ (রহ.)
প্রকাশনী: সত্যায়ন প্রকাশন
বিষয়: আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণা
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৩২

মানবজীবন পরীক্ষার মধ্য দিয়েই পরিচালিত হয়। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে ইসলাম মুমিনকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ গুণ অর্জনের নির্দেশনা দিয়েছে: সবর (ধৈর্য) এবং শোকর (কৃতজ্ঞতা)। আল্লামা ইবনুল কায়্যিম জাওযিয়্যাহ (রহ.) তাঁর অমূল্য গ্রন্থে এই দুই গুণের তাৎপর্য, প্রকারভেদ এবং তা কীভাবে মানুষের জীবন ও ঈমানকে শক্তিশালী করে, তা অত্যন্ত বিশদভাবে তুলে ধরেছেন।

বর্তমান সময়ে সবর ও শোকরের প্রকৃত অর্থ প্রায় ভুলে যাওয়া হয়েছে। অনেকেই সবর বলতে শুধুমাত্র বিপদে ধৈর্য ধারণ করাকেই বোঝেন, আবার শোকর বলতে বোঝেন ভালো কিছু পেলে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ উচ্চারণ করা। কিন্তু সবরের প্রকৃত অর্থ হলো ইবাদতে অবিচল থাকা, পাপ থেকে বিরত থাকা এবং জীবনের প্রতিটি চ্যালেঞ্জে আল্লাহর উপর আস্থা রাখা। অন্যদিকে, শোকর হলো আল্লাহর দানকৃত নিয়ামতের জন্য কৃতজ্ঞ হওয়া এবং সেই নিয়ামতের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা।

সবর ও শোকরের গুরুত্ব বোঝাতে লেখক জীবনের নানা দিক থেকে বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন, সবর তিন ধরনের হতে পারে—ইবাদতের প্রতি ধৈর্য, পাপ থেকে বিরত থাকার ধৈর্য এবং বিপদে ধৈর্য। শোকরের ক্ষেত্রেও রয়েছে নিয়ামতের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং সেই নিয়ামত আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ব্যবহার করার নির্দেশনা।

গ্রন্থটিতে লেখক কুরআন ও হাদিসের আলোকে সবর ও শোকরের তাৎপর্য এবং তা মুমিনের জীবনে কীভাবে কার্যকর হয়, তা অত্যন্ত বাস্তবধর্মী উপায়ে উপস্থাপন করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন, সবর ও শোকরের অভাবে ব্যক্তি তার ঈমানী শক্তি হারায় এবং প্রাপ্ত নিয়ামতের মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ হয়। এই দুই গুণ যদি যথাযথভাবে চর্চা করা যায়, তবে তা মানুষকে আল্লাহর নৈকট্যে পৌঁছাতে সহায়তা করে।

এই বই পাঠকের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা হতে পারে। আল্লামা ইবনুল কায়্যিমের চিন্তার গভীরতা এবং লেখার কৌশল পাঠকের মনে গভীর প্রভাব ফেলে। তাঁর এই রচনা আত্মশুদ্ধির জগতে একটি মূল্যবান সংযোজন, যা সবর ও শোকরের গুরুত্ব নতুনভাবে উপলব্ধি করতে সাহায্য করে।